সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ , ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপিতে চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই : মাহবুবুর রহমান ৯ মাসে ছয়শ’র বেশি ধর্ষণ এনসিপির কেন শাপলাই চাই? সুনামগঞ্জে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলো শারদীয় দুর্গোৎসব ৪০০ ছাড়িয়েছে কাঁচা মরিচ, শতকের কাছাকাছি বেশিরভাগ সবজি ‎জামালগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা দেখার হাওর ঢেকে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উকিলপাড়ায় পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গমন : দুর্ঘটনার আশঙ্কা দুর্গাপূজা : মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ৩ ফার্মেসিকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা পথে যেতে যেতে: পথচারী সুনামগঞ্জ পৌর শহরে স্পিডব্রেকারগুলো যেন মরণফাঁদ! ‎জামালগঞ্জে 'উন্নতি সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতির' শিক্ষা উপকরণ ও  বস্ত্র বিতরণ সুনামগঞ্জে 'ধর্ষণ মামলায়' আসামিদের শাস্তির দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক এগিয়ে নিয়েছি : সিইসি আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড আজীবন জনগণের সেবা করতে চাই : পাবেল চৌধুরী ফার্মেসিতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ‘ফিজিশিয়ান স্যাম্পল’

একজন আক্তার, যে মানুষ হয়ে উঠেছে আশ্রয়

  • আপলোড সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৮:০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৮:০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
একজন আক্তার, যে মানুষ হয়ে উঠেছে আশ্রয়
এই যুগে যখন সভ্যতা প্রযুক্তির চূড়ায় পৌঁছে গেছে, তখনও মানবতা কাঁদছে ক্ষুধার্ত ভবঘুরে আর রাস্তার পাশে আহত হয়ে কাতরানো কুকুরের চোখে। ঠিক এই প্রেক্ষাপটে একজন দরিদ্র রিকসাচালক যুবকের নাম আমাদের বিবেকে নাড়া দেয়- আক্তার মিয়া। তার গল্প শুনলে মনে হয়, এখনো মানবতা মরেনি। বরং বেঁচে আছে কিছু দরিদ্র অথচ হৃদয়ে ধনী মানুষের প্রাণভোমরায়। সুনামগঞ্জ শহরের এক কোণে, এক পঙ্গু কুকুরের পাশে দাঁড়িয়ে যে যুবকটি প্রতিদিন ৫-৬ বার গিয়ে ওষুধ দিচ্ছেন, পানি খাওয়াচ্ছেন, ককশিট বদলাচ্ছেন, দুর্গন্ধ যাতে না ছড়ায় সে ব্যবস্থা করছেন - তিনি কোনো এনজিও কর্মী নন, কোনো সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীও নন। তিনি রিকসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর দৈনিক আয় থেকেই ব্যয় করেন কুকুরটির ওষুধ-পথ্য ও ভবঘুরে মানুষের খাদ্যের জন্য। দ্রুতগতির এক সভ্যতায় যেখানে মানুষ নিজের বৃদ্ধ বাবা-মায়ের পাশেও দাঁড়াতে নারাজ, সেখানে আক্তারের এই প্রাণিসেবা ও মানুষপ্রীতি আমাদের চোখে জল এনে দেয়। কুকুরটি যখন দুর্ঘটনায় আহত হয়, তখন রিকসা থামিয়ে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে সে প্রাণীটিকে কোলে তুলে নিয়েছিলেন। শহরের ফুটপাতে এক দোকানের সহানুভূতিশীল মালিক আব্দুর রহমানের দোকানই এখন তাঁর রাতের আশ্রয়স্থল। আক্তার এখানে থাকেন কেবল কুকুরটির সেবা করতে সহজ হয় বলেই। তবে আক্তারের দৃষ্টিভঙ্গি এখানেই শেষ নয়। তাঁর চোখে স্বপ্ন- একটি স্থানীয় ‘জীবপ্রেমী টিম’ গঠনের। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এমন একটি দল গড়ে উঠলে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমার টাকা-পয়সা নেই, তবে বিবেক আছে।” এমন নিরেট সততা ও দায়িত্ববোধ আজকের বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত হবার মতো। আমাদের সমাজে যখন প্রতিদিন পশু নির্যাতন, ভবঘুরেদের প্রতি অমানবিক আচরণ এবং সহানুভূতির সংকট দেখা যায় - তখন আক্তারের মতো একজন মানুষের অস্তিত্ব আমাদের আশা জাগায়। তাঁর মতো মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নীতিনির্ধারকদের অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া জরুরি। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন চাইলে একটি ‘জীবন ও প্রাণী সেবা ইউনিট’ গঠন করতে পারে, যার অংশ হতে পারে আক্তার ও তাঁর মতো জীবনঘনিষ্ঠ মানুষরা। এই উদ্যোগ হতে পারে সারাদেশে একটি মানবিক দৃষ্টান্ত।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য